এক দেশে এক জমিদার ছিলো। সে তার জমিদারী এলাকার সকল কিছুর উপর কর আদায় করতো। করের মাত্রাও ছিলো খুব বেশি। জমির খাজনার পাশিপাশি জলের উপরও জলকর বসিয়েছিলো। তৎকালে মানুষ পুকুরের জল পান করতো। জমিদার বাড়িতে স্বচ্ছ জলের একটি পুকুর ছিলো। সেখান থেকেই প্রজাগণ জল সংগ্রহ করতো। প্রতি কলসি জলের মূল্য বা জলকর ছিলো পঁচিশ পয়সা।
রাজ্যের লোকেরা জমিদারকে অত্যাচারী জমিদার নামে আখ্যায়িত করেছিলো। কেউ তাকে ভালো বলতো না।
জমিদার বাবু মারা যাওয়ার পর, মুখে মুখে প্রচারিত হয়ে গেলো অত্যাচারী জমিদারের হাত থেকে রেহাই পেলো জনগণ। মুখে মুখে একথা নতুন জমিদার অর্থাৎ জমিদারের ছেলের কানেও এসে পৌঁছালো বিষয়টি। জমিদারের ছেলে পিতার সুনাম সৃষ্টির জন্য পদক্ষেপ নিতে আরম্ভ করলো।
প্রথমে জমির খাজনা তিনগুণ বৃদ্ধি করলো। পূর্বে খাজনা বাঁকি পড়লে জেল-জরিমানার ভয় ছিলো না। সে জেল জরিমানার ব্যবস্থাও প্রবর্তন করলো। এমন কি প্রজাগণ যেই পুকুরের জল কলসি প্রতি পঁচিশ পয়সা জলকর দিয়ে নিতে পারতো, নতুন জমিদার সেই জলের করও বৃদ্ধি করে পঞ্চাশ পয়সা করে দিলো।
নতুন জমিদারের এহেন সিদ্ধান্তে যারপরনাই কষ্ট পেতে থাকলো। প্রজাগণ বলতে আরম্ভ করলো-
ছেলের চাইতে ছেলের বাপই তো ভালো ছিলো।
ছেলের মুখে তখন আর হাসি ধরে না।
-
সাগর হেলাল
Post a Comment