আদরের পাখি



স্বামীর কড়া নির্দেশ। খাঁচার পাখিটার যেনো যত্নের অভাব না হয়। পাখিটা তার খুব প্রিয়।  লোকটি বাইরে থাকা অবস্থায় স্ত্রী খাঁচাটা নামিয়ে পাখিকে খাবার দিচ্ছিলো, আর তার সাথে মধুর আলাপ করছিলো। পাখিটিও সেই আলাপে খুশি হচ্ছিলো। যেইখানটায় খাঁচা নামিয়ে পাখিকে খাবার দেয়া হচ্ছিলো- তার পাশেই একটি বটি ছিলো। কথোপকথন চলছিলো। আলাপটা মধুরতম পর্যায়ে পৌঁছলে এক পর্যায়ে সে তাকে আদর করে খাঁচা থেকে বের করে দুই হাতে ধরে চুমু খায়। আপন মনে বলে- 

- ওরে আমার সোয়ামির আদরের পাখিরে। ইচ্ছে করে তোরেও চাবাইয়া খাই। না, থাক। তুই আরও বড়ো হ। তার পর তোরে জবাই দিমু, চিটাগাঙ থেইকে মশল্লা এনে চুপি চুপি একাই মজা করে খেয়ে ফেলবো। 

এই ফাঁকে তার স্বামী চলে আসে তা সে জানতেও পারে না। তোরে জবাই দিমু থেকে আরম্ভ করে সব কথা সে নিজ কানে শুনতে পায়। পাশে থাকা বটিখানাও তার নজর এড়ায় না। আর যায় কোথায়! পাশে থাকা বটি চলে আসে স্বামীটির হাতে। রক্তচক্ষু নিয়ে স্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলে- আমার পাখিরে তুই জবাই কইরে খাবি ? তার আগে তোরেই আমি জবাই দিয়া দিমু। 

ধারালো বটির কোপে স্ত্রীর মাথা দেহ থেকে আলাদা হয়ে যায়। তার হাত গলে পাখিটি উড়ে যায় নতুন কোন গন্তব্যে।

স্ত্রীটি জানতে পারলো না তার মৃত্যুর কারণ ! 

কিছু মানুষ পশু ক্বোরবানীর বিরোধিতায় মানুষের সাথে এমনই আচরণ করে। পশু নয়, পশুত্বকে আগে ক্বোরবানী করা প্রয়োজন। তবে, পশুর মাংস খেয়ে যারা পশু ক্বোরবানীর বিরোধিতায় নামেন- তাদের স্ত্রীর সাবধান থাকার প্রয়োজন আছে বৈকি!

-

সাগর আল হেলাল

কলামিস্ট

২৪.০৩.২০২২

Post a Comment

Previous Post Next Post