মঞ্চায়ন

 



নাটকের মতোই মঞ্চায়ন হয় জীবন। জীবন প্রবাহ। কখনো না কখনো এমন উপলব্ধি এসেই যায় যে, যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। সকালে ভাত না খেয়ে বের হয়ে বন্ধুর আপ্যায়নে উদরপূর্তি অথবা সারাদিন কোত্থায়ও কোন খাবার না খেয়ে ঘরে এসে খাই। উভয় ক্ষেত্রে একই উত্তর- যা হয়েছে, ভালোই হয়েছে।

পত্রিকা প্রকাশনার কাজ করতে যখন প্রেসে যেতাম, বানানগুলো যখন প্রুফ রীডার সংশোধন করতেন চেয়ে চেয়ে দেখতাম। কালো কালির লেখাগুলোর উপর লাল কালি দিয়ে কেটে পার্শ্বে সঠিক বানান লিখতেন। কম্পোজিটর শন দিয়ে ভুল অক্ষরটা টেনে ওঠাতেন যেভাবে নানী দাদীদের দেখতাম মাথার পাকা চুল তুলতে। প্রুফ রীডারের গোঁফ বেশ পুরু এবং পেকে একদম শাদা ছিল। ধূমপানও করতেন খুব। সিগারেটের ধোঁয়া লেগে গোঁফগুলো কেমন হলদেটে দেখাতো। ওনার সাথে হাত মেলালে কয়েক ঘন্টা হাতে সিগারেটের গন্ধ থাকতো। 

লিটল ম্যাগাজিনের সহকারী সম্পাদনার কাজে তৃতীয় পত্রিকা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বৈশাখী ছাপার কাজ চলছিলো। কম্পোজিটর আসে নাই। আমি হাজির ছিলাম। মেশিন ম্যান এর হাতে কোন কাজ নেই। আমি শনটা হাতে নাড়া চাড়া করছিলাম। মেশিন ম্যান মনে হয় আমার মাথায় কি চলছিলো ধরে ফেললো। বললো- আরে, আপনিওতো কারেকশন করতে পারেন ! চলেন, দেখিয়ে দিই। আমার কোন অমতই কাজে এলো না। প্রুফ রীডারের কাগজখানা আমার হতে ধরিয়ে দিয়ে বললো- খুব আস্তে। শুধু শন যেন পিছলায়ে না যায়। আর কম্পোজ ভাঙবে না। রশি নরম করে দিয়েছি। জোর করতে হবে না। কিছুক্ষণ দ্বিধা-সংকোচ। তারপর হয়ে গেলো। শিখে গেলাম, লেটার কম্পোজ কাজের কারেকশন। পরে কম্পোজও ওভাবেই শিখেছিলাম। চতুর্থ পত্রিকা বের করার জন্য কম্পোজিটরের জন্য কোন বাজেট রাখার প্রয়োজন রইলো না।

-

ধন্যবাদ

Post a Comment

Previous Post Next Post