ঈশানের ঘাটে যুবকেরা জোট হয়েছে। ময়ূরপঙ্খী সজ্জিত হচ্ছে বাইচের নৌকায়। বিদ্যুত বেগে পাড় হয়ে যাবে সাঁওতালী কালিদহ। মনসার চোখ ফাঁকি দেওয়ার দুরভিসন্ধি। উজানের ঘাটে ট্রফি হাতে অপেক্ষমান রাজা দণ্ডধর। আসলে, পুরষ্কার প্রদানের আত্মতৃপ্তিই আলাদা ! মনে মনে ভাবে- আয় বাছা ! আর যে আমার দেরি সহে না !
পুর্ণিমার নদী কেটে ছাড়া হলো ময়ূরপঙ্খী। যাত্রারম্ভেই এক যুবকের অপমৃত্যু। না, এ কাজে আর নয় অলসতা। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় গাঙ পাড় দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে উজান নগরে। এ তার আজন্ম সাধ। সেখানে গেলেই হবে যাত্রা সমাপ্তি।
হঠাৎ পুর্ণিমায় গ্রহণ শুরু। ধুন্ধুকার পরিবেশে ভেসে গেলো নির্ভরশীল মাল্লা। নৌকার পাটাতনে চড়াৎ চড়াৎ শব্দ। ভাঙছে যেন বরফের চাঁই। মাঝি এখন একেলা। পেছনে ভয়ঙ্কর হাঙ্গরের তাড়া। সামনে কুমীর জলে লাফালাফি করে। ঘর্মাক্ত মাঝি হাল নেড়ে নৌকার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে।
মনসার উত্থিত ফণায় নৌকার বৈঠা বিষে জরজর। নীল হয়ে আসে মাঝির দেহ। ঘুরতে থাকে বয়সের চাকা। দ্রুত। কুঁজো মাঝির চেষ্টা প্রাণপণ। ভুলে যায় উজান ঘাটের স্বপ্ন। আগে চাই আপন প্রাণ প্রতিষ্ঠা। হৃদয়ে জেগে ওঠে হাহাকার।
আর কতোদূর লাও ডোবা মিঠে জলের বাঁক ! সেখানে ডুব দিয়ে বৃদ্ধ নাকি হয়ে যায় আবার যুবক।
-
সাগর আল হেলাল
গল্পকার
২৪.০৩.২০২২
Post a Comment