কবি বন্দে আলী মিয়া ছিলেন একাধারে গীতিকার, উপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার। তিনি পাবনা জেলার রাধানগর গ্রামে এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মুন্সী উমেদ আলী ছিলেন পাবনা জজকোর্টের একজন নিম্ন পদের কর্মচারী। শিক্ষা ও কর্মজীবন তিনি পাবনার মজুমদার একাডেমী থেকে ১৯২৩ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে কলকাতা আর্ট একাডেমীতে ভর্তি হন এবং ১ম বিভাগে উত্তীর্ন হন। ১৯২৫-এ ইসলাম দর্শন পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৩০ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। দেশ বিভাগের পর তিনি কলকাতা জীবনে রবীন্দ্র-নজরুলের সান্নিধ্য লাভ করেন। তখন তাঁর প্রায় ২০০ খানা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। সে সময় বিভিন্ন গ্রামোফোন কোম্পানীতে তাঁর রচিত পালাগান ও নাটিকা রের্কড আকারে কলকাতার বাজারে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৬৪-র পর প্রথমে ঢাকা বেতারে ও পরে রাজশাহী বেতারে চাকরি করেন।
তিনি তাঁর কবিতায় পল্লী প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনায় নৈপুন্যের পরিচয় প্রদান করেছেন। প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর রচিত শিশুতোষ গ্রন্থ আজও অমর হয়ে আছে। গ্রন্থসমূহ কাব্যগ্রন্থ ময়নামতির চর (১৯৩২) অনুরাগ (১৯৩২)। অনুরাগ (১৯৩২), পদ্মানদীর চর (১৯৫৩), মধুমতীর চর (১৯৫৩), ধরিত্রী (১৯৭৫) উপন্যাস অরণ্য গোধূলী ঝড়ের সংকেত নীড়ভ্রষ্ট (১৯৫৮) জীবনের দিনগুলো বসন্ত জাগ্রত দ্বারে (১৯৩১), শেষ লগ্ন (১৯৪১), অরণ্য গোধূলি (১৯৪৯), শিশুতোষ গ্রন্থ চোর জামাই (১৯২৭) মেঘকুমারী (১৯৩২) মৃগপরী (১৯৩৭) বোকা জামাই (১৯৩৭) কামাল আতার্তুক (১৯৪০) ডাইনী বউ (১৯৫৯) রূপকথা (১৯৬০) কুঁচবরণ কন্যা (১৯৬০) ছোটদের নজরুল (১৯৬০) শিয়াল পন্ডিতের পাঠশালা (১৯৬৩) বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা সাত রাজ্যের গল্প (১৯৭৭)।
সম্মাননা শিশু সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৬৫ সালে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার, ১৯৭৮ সালে রাজশাহীর উত্তরা সাহিত্য মজলিস পদক লাভ করেন। তিনি মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন। মৃত্যু ১৯৭৯ সালের ১৭ জুন রাজশাহীতে তাঁর মৃত্যু হয়।
-
সাগর আল হেলাল
০৮.০৪.২০২২
============
إرسال تعليق