----------------------
সাগর আল হেলাল
আকাশ মেঘে ঢেকে থাক কিংবা কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাক চারপাশ। অথবা ঝুম বৃষ্টিতে ভাসতে থাক সড়ক কিম্বা মাঠের জমি। কিম্বা প্রচণ্ড ঝড়ে ভেঙে পড়ুক গাছের ডাল, উপড়ে পড়ুক ইউক্যালিপটাস-মেহগনির চারা। নলদহ বাজার মসজিদের মুয়াজ্জিন ফজর নামাজের জন্য যখন মসজিদের তালা খোলে, তখুনি তালা খোলে খলিল চাচা তার চায়ের দোকানের। পাবনা-সুজানগর রোডের উত্তর পার্শ্বে নলদহ গ্রামে খলিল চাচার চায়ের দোকানটা একচালা ঢেউটিনের ছাপড়া ঘর। সামনে দুইটা ঝাঁপ, একপাশে রয়েছে একটি এক পাল্লার টিনের দরজা। এই দরজার পাশে বসেই খলিল চাচা দোকানদারী করে। ঝাঁপের উপর দিয়ে বড়ো একটি ছাউনী করা হয়েছে। যেখানে খরিদ্দারদের বসার জন্য বাঁশের তৈরি চড়াট পাতা আছে। খরিদ্দারের আরামের জন্য ঝুলানো হয়েছে একটি সিলিং ফ্যান। খলিল চাচার দোকানে হরেক রকম পণ্য বিক্রী হয়। কিছু পণ্য দোকানের সামনে টেবিল পেতে প্লাস্টিকের বয়োমে, কিংবা সিলভারের ট্রেতে প্রদর্শেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝাঁপোর গোড়ার দিকে রশি দিয়ে ঝুলানো হয়েছে কলা, পাউরুটি, মিনি বিস্কুটের প্যাকেট, চকোচকো ইত্যাদি। দোকানের ভেতরে বড়ো একটা চৌকি পাতা হয়েছে। যেখানে রাখা হয়েছে সিগারেটের জন্য ড্রয়ারযুক্ত সেল্ফ। বেশি দামের দু-এক প্যাকেট আর বেশির ভাগই কম দামের সিগারেটে সাজানো সেল্ফটি। দোকানের ভেতরেও কয়েকটি সেল্ফ আছে, যেখানে রাখা হয়েছে মশার কয়েল, দাঁত মাজা পাওডার, বিড়ির বাণ্ডেল। সামনে পানের ট্রে নিয়ে বসে খলিল চাচা। বাস পা-টা দোকানের বাইরেই থকে, মাঝেইতো চট করতে নামতে হয়।
দোকান খুলে ঝাড়ু দেয়ার কাজ সেরে পাশের টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যায় খলিল চাচা। ততক্ষণে তার বড়ো ছেলে কেরোসিন লাগিয়ে কাঠে আগুন জ্বালায়। তাড়াতাড়ি আগুন জ্বালাতে না পারলে কাস্টমার এসে বসে থাকবে। নানান ধরণের কথা বলবে। সকাল সকাল মানুষের মুখে মন্দ কথা শোনার হাত থেকে বাঁচতেই হাতপাখা দিয়ে বাতাস করে জলন্ত কাঠের আগুনে। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। অল্প কিছুক্ষণ পরেই টগবগ করে ফুটতে থাকে কেতলীর পানি। খলিল চাচার পানি আনা শেষ হলে আল্লাহ্ রাসুলের নাম নিয়ে দোকানে বসে খলিল চাচা। দোকানে বসেই বাজার মসজিদের ইমামের নামাজে উচ্চস্বরে পড়া ক্বেরাত শুনতে পায় সে। ছেলেকে তারাতাড়ি করতে বলে। চুলাটা সম্পূর্ণভাবে জ্বলছে। খলিল চাচার ছেলে ততক্ষণে দোকানের ভেতরে রাখা টেবিলটা প্রতিদিনের মতো দোকানের সামনে ডানদিকে স্থাপন করে। তারপর টেবিলের উপর বিস্কুট, চানাচুর, বাদাম ইত্যাদির বয়োম সাজায়। খলিল চাচার প্রতিদিনের প্রথম খরিদ্দার হলো ফজর নামাজের মুসল্লী। মুসল্লীরা নামাজ পড়ে এসে চায়ের দোকানে রসনা বিলাসে আসে। এটা তাদেরও প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে। দোকানে পাতা চারটা চড়াট খরিদ্দারে ভরে যায়। কিছু মানুষ যারা ভোরে হাঁটতে বেরোয়, তারাও এই সময়টাতেই চায়ের জন্য খলিল চাচার টি স্টলে আসে। আমিও তাদের মধ্যে একজন। আমি অবশ্য বেশি ভীঁড় থাকলে বসি না। একে তো তারা গ্রামের সিনিয়র সিটিজেন, তার উপরে সদ্য প্রর্থনা সেরে এসেছেন। অনেকে হয়তো পকেটে হাত দিয়ে এখনো পড়ছেন দরুদ শরীফ। এহেন অবস্থায় বেশি ভীঁড় দেখলে চা খেয়েই চলে আসি কোনো কোনো দিন আমি। আজও হয়েছে তাই।
খলিল চাচা তার বড়ো ছেলেকে সাথে নিয়ে দোকানদারী করে। চাচার ছেলের নাম অলিভ। অলিভ ছেলেটা ভালোই বলতে হবে, যুগের তুলনায়। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। সে তার বাবার সাথে দোকানদারী করছে ৫-৭ বৎসর। লেখাপড়া না করার বেদনা তার অন্তরকে মাঝে মাঝেই খুঁচিয়ে মারে। শ্রম বিক্রীর চেয়ে নিজের দোকানে কাজ করাই উত্তম, এই শান্তিটুকু তাকে চায়ের দোকানে নিবিষ্ট মনে চা বানানোর কাজ করতে সাহায্য করেছে। চাচা ক্যাশে বসে ক্যাশ নেয়, বিড়ি-সিগারেট দেয়- আবার একই সাথে পানও বানায়। চা বানানো এবং বিতরণের পাশাপাশি পানি ও পান পৌঁছে দেয়ার কাজটিও করে অলিভ। কাজটা পরিশ্রমের। চা বানাতে হয় দাঁড়িয়ে। পরিশ্রমের চাপে অনেক সময় মেজাজ একটু খিটখিটে হয়ে যায়। এটিকে অস্বাভাবিক আচরণ বলা যায় না, বরং কর্মজীবিদের একটা স্বাভাবিক আচরণ বলে গণ্য করা যায়।
খলিল চাচার মোট ছয়টি সন্তান। চারটি মেয়ে আর দুইটি ছেলে। দুটি মেয়ের বিয়ে দিয়ে নাতি-নাত্নির মুখ দেখা হয়ে গেছে। বড়ো ছেলে অর্থাৎ অলিভকে বিয়ে দিয়েছে অল্প কিছুদিন। হাতে এখনো মেন্দীর দাগ আছে। আরেক ছেলে রাহিম। পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে উৎছন্নে যাওয়ার পথে রয়েছে। করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় পাঠের কিছুই শিখতে পারেনি। হঠাৎ করে উপর ক্লাসের বই পড়তে না পারার কারণে, স্কুলের শিক্ষকদের চাপের মুখে স্কুল ছেড়ে পালিয়েছে। পালিয়েছে এই কারণে বলা যায়, তাকে হাজারো চাপ দিয়েও স্কুলে পাঠানো যায় নি। খলিল চাচা চেয়েছিলো, ক্লাস এইট পর্যন্ত অন্তত পড়ুক। ঘরের সাথে স্কুল। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ক্লাস সিক্সে পড়া ছেলে শিশু বলে গণ্য হলেও একেবারে শিশু নয় সে। এখন তার সময় মোটামুটি পালিয়ে পালিয়েই কাটে। কারণ, খলিল চাচা ফজরের আজানের সময় দোকানে যায়। যতক্ষণে সে সকালের খাবার খেতে বাড়ি আসে, রাহিম ততক্ষণে নাস্তা সেরে পগাড় পাড়। অন্য দুটি মেয়ে ছোটো।
রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা তামাটে শরীরের খলিল চাচা এখন মনের দিক থেকে মিষ্টি পোড়া ইটের মতো। নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ হলেও না সুখ, না দুঃখ খরিদ্দারদের চাহিদা পূরণে সচেষ্ট থাকতে হয় তাকে। বাবা জলিল সেখ দরিদ্র মানুষ ছিলো। কিছুই রেখে যেতে পারেন নি। একটি ঘরও নয়। তবে লোকটি ভালো ছিলো। দাদা বলে ডাকতাম। খলিল চাচারা দুই ভাই। নলদহ বাজারেই তারও রয়েছে একটি তরি-তরকারীর দোকান। তাকে সাহায্য করে তার ছেলে রাকিব। আসলে বাংলাদেশে এখন সবাই কাজ না করলে যেনো থেমে যাচ্ছে সংসার গাড়ি। দ্রব্যমূল্য যেভাবে বেড়ে চলেছে, গরীব মানুষের বাঁচার পথ নেই। এই দেশে আবারো গ শ্রেণির নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এক সময় রেশন কার্ডে নাগরিকদের এভাবে শ্রেণি বিন্যাস করা হতো। আমরা আবার ফিরে যাচ্ছি সেই নতুন অবস্থানে। বেঁচে থাকতে হলে করতেই হবে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম, নতুবা মরতে হবে অনাহারে। হাসি-খুশি খলিল চাচা মোটামুটি মিশুক মানুষ। দিনমজুর, রিক্সাচালক, অটো-ট্রলি ড্রাইভার এরাই খলিল চাচার কাস্টমার। মজা করে কিম্বা কাউকে কাউকে বাঁকি দিয়ে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখতে হয়, তাই-ই রাখছে সে। বিকেলে ডাল-পেঁয়াজের বড়া, আলুর চপ, ছোলার ঘুগনি বিক্রী করে সে। অর্থাৎ চায়ের দোকানে যা যা বেচা যায়, তার সবই বিক্রী হয় এখন খলিল চাচার টি স্টলে। এই দোকানের পেছনে বাড়ির মেয়েরাও পরিশ্রম করে। ডাল-পেঁয়াজের বড়া, আলুর চপ, ছোলার ঘুগনি এসব বাড়ি থেকেই তৈরি হয়। ডাল বাঁটা, পেঁয়াজ কাটা, মরিচ বাঁটা কম পরিশ্রমের নয়। রাতে দোকান বন্ধ করতে করতে বেজে যায় রাত এগারোটা। ভোর পাঁচটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত খোলা থাকে খলিল টি স্টল।
সুখ-দুঃখ হাসি-কান্না জীবনের অংশ। অভিমান, রাগ-অনুরাগ পরস্পবের ভালোবাসাকে গভীরতর করে তোলে। খলিল চাচার সংসারেও তাই এসব নিত্য দিনের ঘটনা। শূন্য স্থান থেকে উঠে আসা খলিল চাচার মধ্যে তাই কিছুটা হলেও গর্ব করার স্থান আছে। গতকাল এমনই কোনো এক ঘটনায় দিনটি অলিভের বেজার হওয়ার দিন হয়ে গেছে জানা ছিলো না। অলিভকে না পেয়ে এবং খলিল চাচাকে খুব ব্যস্ত দেখে গতকাল চা না খেয়ে ফেরত এলেও আজকে আবার গেলাম। বাজারের বড়ো মুদিখানা তুহিনের দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখা হলো বারিকের সাথে। চা খাওয়ার দাওয়াত দিলো। আসছি বলে, টাকা ভাঙ্গাতে গেলাম। অবশেষে চায়ের দোকানে গিয়ে দেখি বারিক অপেক্ষা করছে। চায়ের অর্ডারও দিয়েছে। কিন্তু চা বানাবে কে ? অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর খলিল চাচা হাতের কাজ সেরে চা নিয়ে এলো। চা খেয়ে, পান মুখে দিয়ে বিদায় নিলাম খলিল চাচার চায়ের দোকান থেকে। কিন্তু মাথার মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্ন কিলবিল করতে আরম্ভ করেছিলো এরই মধ্যে। এমন জীবন ব্যবস্থার উপর প্রচণ্ড রাগ হতে লাগলো।
অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান এগুলো নাগরিকের মৌলিক অধিকার শুধু কাগজে কলমে। এই দেশে কে গৃহহীন, কে আছে অনাহারে কিম্বা কার ভেসে গেছে গৃহ বন্যার জলে তা দেখার বা এ বিষয়ের কোনো তথ্য কোথাও নেই। শিক্ষা ব্যবস্থা যে গোল্লায় যেতে বসেছে সে খবরও কেউ রাখে না। কেবলমাত্র মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, শিক্ষা অফিস স্থাপন আর কিছু আমলা-মন্ত্রী নিয়োগ ছাড়া কিছুই হয় না এখন। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা-ইংরেজি রিডিং পড়তে পারে না, মুখস্ত করা তো দূরের কথা। গণিতের সাংকেতিক চিহ্নগুলোও ঠিক মতো চেনে না। এহেন অবস্থাতে, যদি বলি নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণের অধিকার নেই- খুব একটা ভুল বলা হবে না। কারণ, কেবলমাত্র ছাত্রকে কতিপয় সুবিধা দিলেই লেখাপড়া হয়ে যায় না। তাকে লেখাপড়া শেখাতে হয়। শিক্ষা বাদ দিলে থাকে অন্ন-বস্ত্রের বিষয়। আজ শিশু তার পেটের রাস্তায় নামছে। কাগজ কুড়াচ্ছে। ইটের ভাঁটা, ওয়েল্ডিং ওয়ার্ক শপ, মোটর গ্যারেজ-রিক্সা গ্যারেজে হাজারো শিশু কাজ করে পেটের ক্ষুধা নিবারণ করছে। এই শিশু যেদিন বড়ো হবে, রাষ্ট্রে কী দাবী থাকবে তার উপর ? দুটি রুটি, দু’মুটো ভাত নিরামিষ তরকারীর সাথে জুটছে তাদের ভাগ্যে কাজ না করে ? আমরা কোন্ উন্নয়নের পথে হাঁটছি। আমাদের গন্তব্য সঠিক আছে কি ? খলিল চাচা যে সময় থেকে অলিভকে সাথে নিয়ে দোকানদারী করে, অলিভের সে সময়ে স্কুলে থাকার বয়স। একটা উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়া ছাত্রের বয়সতূল্য অলিভ আজ বিবাহিত পুরুষ। সংসারে তার অনেক দায়িত্ব। মাথার উপর পিতা-মাতা, কাঁধের উপর ছেটো ভাই-বোন আর স্ত্রী রয়েছে পিঠে। এমন অবস্থায়, একটা কিশোরের ভড়কে যাওয়ারই কথা। তার মেজাজ বিগড়াবে- এটা আশ্চর্যের কোনো বিষয় নয়।
অন্যদিকে খলিল চাচার জীবনও এমনই কেটেছে বাল্যকালে। প্যারালাইজ্ড বাবা ও মা ছিলো কাঁধে। তারপর স্ত্রী সন্তান। চোখের সামনে অনেক স্ট্রাগল করতে দেখেছি। আজ যতোটুকু হয়েছে তার ১০ ভাগের এক ভাগও ছিলো না খলিল চাচার। আজ সংসারের চালের প্রয়োজন মেটাতে খলিল চাচা অন্যের জমি চাষ করে। দিনের মধ্যভাগের সময় যখন সবাই বিশ্রাম করে, খলিল চাচা তখন মাঠে যায় ধানের ক্ষেতে কাজ করার জন্য। বিকেলে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ডালের বড়া ভাজে, আলুর চপ বানায়। তারপর আসে তার মধ্যাহ্নভোজের সময়। এমন একজন খেটে খাওয়া মানুষ তারওতো আত্ম অভিমান থাকতে পারে ! ছেলেকে দু’চারটে মন্দ কথা বলে নিজের যন্ত্রণাকে সামান্য হলেও দূর করার ইচ্ছে পোষণ সে করতেই পারে। সন্তানের উপর যদি পিতার অধিকার না থাকে, তাহলে- সে পিতা কেনো ? কেনো মানতে চায় না সন্তানেরা পিতার সামান্য শাসন ! এটা সমাজের দায়। এখানে অলিভ কিম্বা তার বাবা খলিল চাচার কোনো দায় নয়। এই দায় থেকে আমরা কবে মুক্তি পাবো ?
আমাদের আসলে মুক্তি নেই। আমরা অহর্নিশ করে যাচ্ছি অযাচিত বিষয়ের চর্চা, উপভোগ করছি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়। যা দেখার কথা ছিলো না তা দেখছি, যা শোনার কথা ছিলো না- তা শুনছি কিন্তু বলার কথা ছিলো তা বলছি না। শিশুশ্রম আইনগতভাবে নিষিদ্ধ, কিন্তু সর্বত্র চলছে শিশুশ্রম বিক্রীর হিরিক। এমন অবস্থায়, বয়স যা-ই হোক, চায়ের দোকানে কাজ করার মতো উপযুক্ত দুটি ছেলে থাকতেও খলিল চাচা আজ একা দোকানদারী করছে। এটা দেখার কথা ছিলো না, অথচ- দেখছি। তার দোকানে যেই রকম ভ্যারাইটি ধরণের বেচা-কেনা তা কখনোই একা করা যায় না। প্রচণ্ড রাগে-অভিমানে একাই সে কাজ করে চলেছে। এই অভিমান মানুষের জীবনে ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তখন হয়তো কেউ মৃদু আফসোস করবে বা সামান্য সহানুভূতি জানাবে। কিন্তু এটা সমাজের দায়িত্ব যে, পিতার কাজের প্রয়োজনে সন্তানকে বাঁধতে হবে আষ্টেপৃষ্ঠে। তা না হলে, ভেঙ্গে যাবে পিতা-পুত্রের সম্পর্ক, নূঁয়ে পড়বে একটি উঠতি বৃক্ষ অসহযোগিতার ঘূর্ণিঝড়ে।
আজ অলিভ বাড়িতে কী করছে ? বিয়ের পর ছেলেরা ভেড়া হয়ে যায় শুনেছি, ভেড়াটা কোন মাঠে গেলো দুবলা খেতে ? বয়সে তরুণ সে। এই বয়সে তার কলেজে থাকার কথা। কিন্তু ভাগ্য তাকে নিয়ে এসেছে পিতার দোকানে কাজ করতে, তার কাঁধে চেপে বসেছে স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব। সে কি যৌথ পরিবার পরিচালনার বিষয়ে ভয় পেয়ে গেছে ! এই সংসার যাতনা তাকে শেষ করে না দেয়, তাই কি সে পালিয়ে বাঁচতে চায় ? এভাবে কি বাঁচা যায় ? খলিল চাচা যেদিন থাকবে না তাকেইতো ধরতে হবে এই সংসারের হাল, যেভাবে ধরেছিলো খলিল চাচা। এখানে স্বার্থপর হওয়ার সুযোগ নেই। জীবন কাউকে ক্ষমা করে কি ? প্রশ্নটা আজ জাতির বিবেকের কাছে।
إرسال تعليق